ইনি একজন আশ্চর্য কবি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন ইনি কবিতা
লিখতেই পারেন না। সুনীলের মতকে সমর্থন অনেকেই হয়ত করেন আজও। কিন্তু এটাও ঘটনা, এঁকে বাদ দিলে
এই সময়ের কবিতা দরিদ্র হয়ে পড়ে। এটা হয়ত অস্বীকার করার উপায় নেই, ইনি আজকের একমাত্র জীবিত আন্তর্জাতিক বাঙালি কবি। প্রতিষ্ঠানের দাসত্ব না
করেও যে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, এমনকি প্রতিষ্ঠানকেই
হাস্যকর ও অসহায় করে দেওয়া যায়- তার উদাহরণ ইনি। ইনি মলয় রায়চৌধুরী। নামটাই হয়ত
যথেষ্ট। কিন্তু হাংরি কিংবদন্তি শুধু নন, আজকের বাংলা কবিতায়
আন্তর্জালচর্চারও তিনি অন্যতম পুরোধা পুরুষ। আত্মপ্রতিষ্ঠার ঢাক এমনভাবে বাজিয়েছেন
মলয়, বাজারের দামামা ফুটো করে দিয়েছেন।
১৯৩৯ সালের ২৪শে অক্টোবর
জন্ম নিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের ব্যাতিক্রমী নক্ষত্র শ্রী মলয় রায়চৌধুরী যার পরিচয়
দিতে গেলে খুব কম করেও যা বলতেই হয় তা হল তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক এবং ঔপন্যাসিক এবং যিনি ১৯৬০ সালের "Hungryalist
Movement" এর অন্যতম প্রণেতা। একজন সাহিত্যিকের প্রতিভা কতো
বহুধাবিস্তৃত এবং বিস্ময়কর হলে তা একই সঙ্গে ৬০ জন সমালোচকের দ্বারা একই গ্রন্থে আলোচিত হয়, আপনারা সহজেই অনুমান করতে পারছেন। ২০০১ সালে,
ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘হাওয়া ৪৯’ এর জানুয়ারি সংখ্যার ক্ষেত্রে ঠিক এমনটিই ঘটেছিলো। তাঁরা
সম্পূর্ণ সংখ্যাটিই শ্রী
রায়চৌধুরীর জীবন এবং সাহিত্যকর্মের আলোচনায় উৎসর্গ করেছিলেন।
অধ্যাপিকা স্বাতী
ব্যানার্জি শ্রী
রায়চৌধুরীর কবিতার সতত সক্রিয় প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার বিষয়ে গবেষণা করেছেন। "আবহকাল"
, "আবার এসেছি ফিরে" ইত্যাদি পত্রিকায়
তাঁর কাব্যজগৎ প্রসঙ্গে বিবিধ আলোচনা হয়েছে। তিনিই
সম্ভবত বাংলা সাহিত্যের একমাত্র বিতর্কিত কবি যিনি "প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক
ছুতার" কাব্যরচনার জন্য কারাভ্রমণও করে এসেছেন। কোমরে দড়ির দাগ আজও কি
কোথাও রয়ে গেছে তাঁর কবিতায়?
আমেরিকা মহাদেশের ওহায়ো
ইউনিভার্সিটি শ্রী রায়চৌধুরীর একটি আত্মজীবনী প্রকাশ করেছে
(CAAS , vol 14) ,
ইলিনয়েসের নর্থওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং বাংলা একাডেমী এই দুই
স্থানেই তাঁর "Hungry Literary Generation" সম্বন্ধীয়
যাবতীয় প্রকাশিত কাজ আর্কাইভে রক্ষিত আছে। কলকাতার "লিটল
ম্যগাজিন লাইব্রেরী ও গবেষণা সংস্থা" এর সম্পূর্ণ আলাদা একটি বিভাগ শুধুমাত্র
শ্রী রায়চৌধুরীর কাজের
জন্যেই সংরক্ষিত রয়েছে।
"বাক্" এই
মাসের কবি হিসাবে শ্রী মলয় রায়চৌধুরীকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পেরে গর্বিত এবং
সম্মানিত । আমরা তাঁর দীর্ঘ, সুস্থ সৃষ্টিশীল জীবনের কামনা করি।
(সোনালী চক্রবর্তী, বিভাগীয় সম্পাদক)
মলয়
রায়চৌধুরীর সদ্যলিখিত বীর্য সিরিজ
ম্যাকলেপুত্র
বললে ম্যাকলে,এই যে দেখছেন পিপেগুলো, এতে আছে
😀
আমার অমর বীর্য। বড়োলাট
মাথাটি নাড়লেন, জানতে চাইলেন
😎
কি করব হে এতো বীর্য নিয়ে,
তোমার আই পি সি
🤓
ওটাই যথেষ্ট তো,
বহুকাল চলে যাবে এই দেশে
😵
বললে ম্যাকলে,
স্যার, প্রতিটি বুদ্ধিজীবি-পোঁদে
😝
ড্রপারে এক-এক ফোঁটা ঢালবার ব্যবস্হা
করবেন।
কর্নওয়ালিসপুত্রের
লিঙ্গ
বললেন কর্নওয়ালিস,
দিচ্ছি জমিজমা
যে-যার ডুপ্লিকেট বৌ বৌবাজারে পাবে
বেচারি কুসুম জানতে পারেনি
শশির এরেকটাইল ডিসফাংশান ছিল
মন নাই মন নাই বলে বলে আধুনিক
সেজেছে ব্যাটা শহুরে ডাক্তার
সায়েবরা বলে গেছে শরীরের চেয়ে
মনকে নাকি বেশি গুরুত্ব দিতে হয়
ফ্রয়েড যে কতো বোকা বানিয়েছে
শরৎ চাটুজ্জেকে জিগ্যেস করেছিলুম
চন্দ্রমুখীর সঙ্গে রিলেশানশিপটা
কমপ্লিকেটেড করে দিলেন কেন
উনি বললেন আমি কি করব
বাঙলা খেয়ে-খেয়ে ব্যাটার
এরেকটাইল ডিসফাংশান হয়ে গেল
তাই জমপেশ সংলাপ দিয়েদিলুম
সংলাপ বেচে আফিমের খরচ উঠে যায়
র্যাডক্লিফপুত্রদের
বিপ্লব
সিণ্ডিকেট আছে ছিল থাকবে
হারে রে রে রে রে,
আমায় রাখবে ধরে কে রে
মিছিল আছে ছিল থাকবে
দাবানলের নাচন যেমন সকল কানন ঘেরে
অবরোধ আছে ছিল থাকবে
বাদল-বাতাস যেমন ডাকাত আকাশ লুটে ফেরে
দলবদল আছে ছিল থাকবে
হারে রে রে রে রে,
আমায় রাখবে ধরে কে রে
ঘুষখোর আছে ছিল থাকবে
দাবানলের নাচন যেমন সকল কানন ঘেরে
খেতে আগুন আছে ছিল থাকবে
বাদল-বাতাস যেমন ডাকাত আকাশ লুটে ফেরে
জ্যান্ত পোঁতা আছে ছিল থাকবে
হারে রে রে রে রে, আমায় রাখবে ধরে কেরে
স্ট্যালিনপুত্রগণের
বাষ্পীকরণ
আমি কি করব বলো,
বললে স্ট্যালিন
🤒
বলেছিলুম একফোঁটা করে জিভে দিও
😴
অনেকে ভাবলে তাড়াতাড়ি আমার নকল করবে
😖
কেউ খেল এক চামচ খ্যাপা হয়ে গেল
👹
কাটা গেল বিদ্যাসাগরের মাথা
💀
কতো যে জোতদার মরল গোণাগুন্তি নেই
🗣
কেউ খেল এক গেলাস গুণ্ডা হয়ে গেল
💂
এ-কমিটি সে-কমিটি করে-করে
🕵
পোঁদে বাঁশ গ্রাম-ছাড়া কতো কি করলে
👣
তাই সব উবে যাচ্ছে টিম-টিম করে !
মলয় রায়চৌধুরীর কিছু
স্মরণীয় কবিতা, ফিরে পড়া
ধোলাই
‘নুলো চাঁদ ডফ বাজান - পকেটে সূর্য
ঠাসে আমলারা -
কবিতাকে চুনকাম করব না যযাতি - হেদিয়ে
আছে আবালবৃদ্ধ বাঘ
শুৌলমারীতে সাতকোটি মুখোশ তাই ভালো
করে স্বপ্নভঙ্গ শ্যামবাজারে
সেকেন্ডে পাঁচশোবার চুমোর দরে প্রেম
করেন মাঞ্জাদেয়া নিগমবোধঘাট
স্বাধীনতা উৎসব হয় শৃগালদহে - বহুকাল
লিনডসেস্ট্রিট
হাড়কাটা গলিতে ঢোকে
ট্যাঁকমারে আড়াআড়ি আদিগঙ্গার গর্ভপাত
ঘটে ঠনঠনে
জিভ বের করে থাকে লজ্জাবতী কালী -
মন্দির গিজগিজ করে বেশ্যাদের তীর্থে
বাহান্নবর্তী খদ্দের হাঁড়িকাঠে অবচিত
পঙ্কপ্রভা সমাবিদ্ধ হয়
বুড়ো হাড়ে গ্যাঁজলা ওঠে সকালসন্ধে
ন্যালাখ্যাপা খোকা
মায়াকভস্কি ও লোরকার রক্ত খায় -
যৌনগির্জায় নয়াপয়সা অচল -
শিশুদের চোখে গ্লিসারিন দেখে দরদিদের
বেদনা বিক্ষোভ রাতজাগা
জাগারাত বিক্ষোভ বেদনা ঝরে যায়
ক্রমক্ষীয়মাণ আত্মীয়তা
ধড়াস করে আক্ষেপ গুটোয় - লটারির গুঁতো
সয় বেজন্মা হিপপকেটে ছবি
শুঁড় দিয়ে প্রসব করিনা চাঁদু;
বৃন্দাবনে উল্কি দেয়া অসীম দুঃখকাতরতা
বোতলে চোলাই নীল বুদ্ধদেব
হাঁটলে দেখি হাতের ছাপ চকরাবকরা
আস্তাকুঁড়ে ভগবানের ল্যাজ
কতদিন নৈরাত্মহত্যা কতদিন পাঁজরে
লালছুরি কতদিন
তবু বেঁচে থাকলে ম্যানহোলে প্রশ্বাসের
গন্ধ জমা হয় -
ব্যাঙের ছাতা উপড়ে মরুভূমিদান তোমাদের
সাঙ্গ
দেখবার চব্বিশগণ্ডা ঘুঘু মোতে
চিত্তরঞ্জনের ঘাড়ে পার্কে ফলে ভক্তিনাড়ু
টাক পড়ে উদ্ঘাটিত এপিটাফে মধুসূদনের
সমাধি আড়াল
নারীদের ফুসলিয়ে হাতে রেখে বলাৎকর্ম
চলে অবিরল
জ্বর আসলে ভালো লাগে এই ভেবে কতদিন
আত্মহত্যা করিনি ভ্যান গগ
আমাকে ধোলাই দাও হে ইশ্বর পচে গেলুম
মরে গেলুম মাগো ...'
মা
শুকনো কচুরিপানার মাঝে,
রান্নাঘরে, সায়াপরা অবস্থায়, পুলিশের হাতে
ধরা পড়লেন, চুল খোলা ছিল
শীত - মিশেল হেমন্তে
বাঁহাতে ভাঙা বয়ামে উড়ন্ত ঘোড়া, আঁচলগিঁটে
মেঘ-ভেজা উল্কার হলুদ টুকরো থেকে
খড়ের নৌকো ভাসালেন,
উদাস, বালকদের হল্লায় কূর্চি - কুসুম
এবার ওনার কী দশা হবে জানি
আবদুল, গফুরের ভাই, খবরটা প্রথম দিল
কিন্তু মা হাল ছেড়ে দিলেন, ভুরুর ধুলোয় ঝাপসা সংসার
কালীঠাকুরের প্রদীপের তেলে কেন - যে লুকিয়ে
রেখেছিলেন মুর্শিদাবাদী খুদ আর ভাঙামুগ
খানিক রোদমাখা ত্বক, অপরিচিত ভয়ে, গালে হাত রেখে , নাম ভুলে গেছেন
গরাদের স্যাঁতসেঁতে ছায়া পড়েছে ঝুরিনরম মুখে
মগজ একেবারে ল্যাংটো
থিরথিরে শিশিরে, ওঁর হাসির মতন দেখতে রোগা
কৃষ্ণসার
তুষারে কাঠের জুতো পায়ে, আকাশমুখো নেকড়েরা, সারাদিন কেঁদেছেন
পুরুতমশায়
ছুঁচে - টানা রক্ত নিলেন হাত থেকে
ঠোঁটের কোণায় কষ্ট, হাঁপিয়ে উঠছেন সিঁড়ি চড়তে
মাহি ছমকছল্লো
ছমকছল্লো মীরা মীরাবাঈ
ভারজিন বাঁসুরিয়াউলি বিবাদি বাগের
ঢেউখেলানো মরুভূমিতে
উটের পিঠে বসে প্রথম সাক্ষাতেই তো
বলেছিলেন আপনার গর্ভাশয় নেই
সোনার গুঁড়ো - মাখানো আপনার জিপসি বুক
আমার পিঠে ঠেকছিল
আপনি বললেন,
গিরধারি মালিক- মকান
আমাকে রেপ করো ।
সর্বহারার নেতা
লৌনডাবাজ শ্রীকৃষ্ণের গল্প শোনালেন
লোকটা কালো হাবশি পুরুঠোঁট কদমছাঁট
তেলচিটটা পালোয়ান
হরবখত বৃষ্টির একঘেয়ে কান্নার ঢঙে
গোরু- মোষকে বাঁশি শোনাত
বিন্দি ঝুমকা চানিয়াচোলি মোজরি ঘুংরুর
খেয়াল নেই
আপনি বললেন ,
আমার গানে সত্যি কি রসুনের গন্ধ আছে?
কত পুরুষ এর আগে ভিজিটিং কার্ড দিয়ে
গেছে, সব ঢোঙ্গি বকওয়াস।
সোয়ামি মনপসন্দ আমাকে রেপ করো।
ভ্লাদিমিরকে মলম মাখিয়ে
অমর করতে গিয়ে হাপিশ হয়ে গেছে হাবশিটা
কেন না তার আগে
অনেকগুলো অচেনা লাশকে মলম মাখিয়ে
অমরত্ব কোশিশ করতে হয়েছিল।
যেগুলো বেওয়ারিশ ভাসছে সাবর্ণ
চৌধুরীদের পেঁকো লালদিঘিতে
ছমকছল্লো রানি উলঙ্গিনী
সন্ত মীরা মীরাবাঈ ভারজিন থাকার দুঃখ
বয়ান করেছেন
রোজনামচার প্রতি গানে
দুঃখ এই যে কোনো চাষিমজুর আর আপনার
গান গায় না
শুধু দলবাজি আর খুন্নস আর মারধাড়
কেরিয়ারের শীর্ষে কিংবদন্তী হবার আশায়
মাহি নাচানিয়া আপনার জিভে বিষের তুঁতে
হরিয়ালি
উটের পিঠে আমাকে জড়িয়ে আপনি
একনাগাড় গেয়ে চলেছেন ,
প্রভু আমার বাচ্চাদানি নেই ,
আমার প্রেমে খোট নেই গিরিধারি বাংগালি
আমাকে রেপ করো।
আমাকে নাও আমাকে নাও আমাকে নাও।
আহ্লাদে সাতখানা
যে - মেয়েটির
চোখের পাতা দুর্গাটুনটুনির ফিনফিনে ডানায় গড়া
তার সঙ্গে মানে বাদ-দেয়া শব্দে তৈরি
আলপটকা বাক্যালাপে
নাতি - নাতনিদের ঝুলতে শেখাচ্ছিলেন
লোলগতর বাদুড়ঠাকুমা
যে - গ্রামে
মোষের কেঁদোপিঠে বসে শালিকপাখিরা হিচহাইক করে
সেখানের প্রেসারকুকারগুলো কিন্তু
মেয়েটিকে দেখে আজও সিটি মারেনি
অথচ ওর সারা - গায়ে জল চুয়ে-পড়া সোঁদা
সুড়ঙ্গের ঘনসবুজ গন্ধ ছিল
যে - দেশে
চোখের জল ফেললে সত্যিই টপ করে মিউজিকাল শব্দ হয়
ওখানেই তো প্রতিটি শবের চোখের পাতা
বোজাবার চাকরি পেয়েছে মেয়েটি
ইচ্ছে করলে ও চাঁদের কায়দায় যে- কোনো
সমুদ্রের গোমর ঘোচাতে পারে
যে - জাজিম
মেয়েটির নাচের তাল নিজের মির্জাপুরি নকশায় পুষে রাখে
তা আসলে ঝাঁকবাঁধা কাজরি মাছের
কাতুকুতুতে খিলখিল ঢেউ
শহুরে টবের গোলাপের ঢঙে আলসে থেকে
ঝুঁকে মেয়েটিকে ডাক পাড়ে
যে - লোকটা
লুঙ্গি না ধুতি পরবে ঠিক করতে না পেরে কাকতাড়ুয়া রয়ে গেল
তার সঙ্গে বিয়ে হতে ঝিলমিলে অন্ধকারে
শুয়ে মেয়েটি জানতে পেরেছে
ওর বুকের খড়ে কুয়াশা জমে শ্লেম্মা হয়
বলে মাথায় পোড়ামাটির হেলমেট
যে- দরজার
কপাটে খোলা আর বন্ধ করার আওয়াজ চুপচাপ লুকিয়ে থাকে
তা ঘুরিয়ে বলা যায় যে সে-আওয়াজ
এমনভাবে গুজব ফিরি করে যেন
বাদামের পাঠবস্তু চোখের সামনে মেলে
ধরে মুখস্ত করছে কাঠবিড়ালি
যে-জেলখানার
এক চিলতে আকাশে দ্বিতীয়ার চাঁদ তিন লাফে উঠে পড়ে
সেখানে পেঁয়াজ ছাড়িয়ে- ছাড়িয়ে যাদের
কান্নার স্টক শেষ হয়ে গেছে
পান্তুয়ার মাংস দিয়ে তৈরি সেসব
মহিলাদের ভিড়ে মেয়েটি আজ নায়িকা
কোকিল সাঁজোয়া
স্বপ্নের নারীর প্রতি তিন লক্ষ জলজ
মহুয়া ঝাপটা গাঢ় উন্মোচনে
শ্বাপদশাবক বুকে ভাঙা টুঁটি নিবিড় রূপসী
জানু নাভি কটিতট
পীড়নে অরণ্য হানি উদগ্র স্তবক নীচে
তপ্ত কাঙ্ক্ষিতার ফুলদানি
বৃষ্টিপাতে কাঁপে সেতু মুঠিতে
গোলকধাঁধা ছোট্ট দুই আদিনম্র ঊষা
নির্মোহে জ্বলন্ত হাত উল্লসিত
নিঃশ্বাসের বেগে তীব্র স্ফীত মাংসপেশী
বারংবার আয়োজনে কয়েক আলোকবর্ষ দূরে
ছেঁড়ে মগ্ন মেমব্রেন
নিরুদ্দিষ্ট আবরণে সদ্যলব্ধা বৈদেহীর কোষে সুধা অতিমূর্ত রক্তকীটহীন
হাকুচ জ্যোৎস্নাক্রান্ত এলো - চুলে
ডুবে যায় দৃঢ় রুঢ় প্রঘাতকণিকা
বৈরী নশ্বরতা নামে অগ্নির অদৃশ্য
গর্তে স্থান অপহৃত লুকোবার
বিদীর্ণ নিকট স্থির অবিশ্রান্ত
প্রজাপতি নেমে পায় নিস্ফুল চাদর
সমর্পিত আলিঙ্গন সব ছায়া পর্যাপ্ত
বিস্ফার দ্রুত লুব্ধ পোকা মায়া।
প্রথম প্রেম ; ফয়েজ আহমদ ফয়েজ
গরমের ছুটিতে খালি - গায়ে যখন নাজিমদের বাড়িতে
লুডো খেলতে যাই,
কুলসুম আপা রাস্তা পেরোবার ঢঙে
বাঁদিক - ডানদিক তাকিয়ে দুহাতে দড়াম
করে দরজা বন্ধ করে দ্যান
আমায় অন্ধকার স্যাঁতসেঁতে ঘরে এক
হ্যাঁচকায় টেনে নিয়ে ।
আমি বলি, 'ভোজপুরি বলবেন, আমি উর্দু বুঝতে পারি না ।'
উনি বলেন, 'তুই
চোখ বোজ, তাহলেই বুঝতে পারবি,
এ তো খুব সহজ রে।'
আমি চোখ বুজে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি
একগাদা হাঁসমুর্গির মাঝে ।
কুলসুম আপা বলেন, 'মুঝে দে দে রসিলে হোঠ, মাসুমানা
পেশানি, হসি আঁখে কে ম্যায় একবার ফির রঙ্গিনিয়ো মে
ঘরঘ হো জাউ ...'
আমি বলি, 'ধ্যাৎ
কী করছেন কী, আমার লজ্জা করে ।'
উনি ওনার কালো মোটা ঠোঁটে বলতে থাকেন, 'মেরি
হস্তিকো
তেরি এক নজর আগোশ মে লে লে হমেশা কে
লিয়ে
ইস দাম মে মহফুজ হো জাউ জিয়া-এ হুস্ন
সে জুল্মত-এ দুনিয়া
মে না ফির আউ ...'
আমি বলি, 'আঃ
ছাড়ুন না,এরকম করছেন কেন আপা?'
উনি বলেন, 'গুঁজিশতা
হসরতো কে দাগ মেরে দিল সে
ধুল জায়ে...'
আমি বলি, 'না না
না...'
আপা ওনার ঘুমন্ত কণ্ঠস্বরে, 'ম্যায় আনে ওয়ালে
গম কি
ফিকর সে আজাদ হো জাউ মেরে মাজি ও
মুস্তকবিল সরাসর
মাভ হো যায়ে মুঝে ওয়হ এক নজর,
এক জাভেদানি সি
নজর দে দে ।'
আমি বললুম, 'রোজ
রোজ এরকম করেন কেন ?'
উনি বললেন, 'তবে যে তুই বলছিলিস উর্দু বুঝতে
পারিস না;'
0 comments:
Post a Comment